৭ আগস্ট, ২০২৪ ইং
২৩ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৩০ মহররম, ১৪৪৬ হিজরি
রোজঃ বুধবার
বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে ১৫ বছরের শাসনামলের অবসান ও গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শূন্যস্থানের অবস্থার মধ্যেই কিছু কথা।
প্রথমত, পলিটিক্যাল ও নন পলিটিক্যাল পার্সোনের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকবে এটা খুব স্বাভাবিক।
রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দল তার নিজ নিজ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে খুব কঠিন ভাবে জোর দিবে এটা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখাটাই বোধহয় সমীচীন হয়। এখন এখানে বিতর্ক হবে, যুক্তি পালটা যুক্তি থাকবে সেটা গণতন্ত্রের সুন্দরতম বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটা।
দ্বিতীয়ত,
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ইতিহাস এত বেশি চর্চা হয়েছে, তা পৃথিবীর যে কোন ইতিহাসকে ছাড়িয়ে গেছে।
ইতিহাসের প্রতি অনেকের এলার্জি হতে পারে। কারণ ফেলে আসা সত্য কথা হজম করটা অনেক কঠিন ই বলে মনে হয়।
বর্তমান প্রজন্ম (ধরে নিই এই Gen-Z) যাদের জন্ম ১৯৯৯ সাল পরবর্তী সময়ে এদের কারো জানার কথা না ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত শাসনামলের প্রকৃত ইতিহাস ও ঘটনা প্রবাহ।
কারণ এদের যখন বোঝার বয়স হয়েছে তারা শেখ মুজিবের ইতিহাস এত পড়াশোনা করেছে যে অবচেতন মনে তার কোন ভুল নাই বা সে ভুলের উর্ধ্বে এমন মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক না।
এদের কাছে শহীদ জিয়াউর রহমান তো দূরের কথা বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কেই তেমন কিছু মনে থাকার কথা না।
একটা উদাহরণ দিই এখানে
-শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে শতশত বার কুৎসিত, নোংরা, নিচুস্তরের কথা বলেছে। এতবার ই বলেছে তার সংখ্যাটা গোনা সম্ভব না। এখন কথা হলো কোন কথা বা কোন ইস্যুর কাউন্টারে আরেকটা কথা চলে আসে। এখানে বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনা সম্পর্কে কয়টা এমন বাজে নোংরা, কুৎসিত মন্তব্য করেছেন?
বেগম খালেদা জিয়া চাইলে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী মৃনাল কান্তি দাসের লেখা 'আমার ফাঁসি চাই' এর প্রত্যেকটা লাইন বাই লাইন বলতেই পারতেন। সেখানে এত কুৎসিত বিষয়গুলো উল্লেখ আছে সেসব বললে আর নতুন করে কিছু বলা লাগতো না।
এখানে মাইন্ডসেট, পারিবারিক শিক্ষা, ব্যক্তি শিক্ষা, আত্মার শিক্ষার বেসিক পার্থক্যটা বুঝিয়ে দেয়।
আমি বলছি না বেগম খালেদা জিয়া একেবারেই অন্যায় মুক্ত মানুষ। তার ও অনেক ভুল বা অন্যায় থাকতেই পারে। সেসব নিয়েও আলোচনা হতেই পারে।
এইযে খালেদা জিয়ার সাথে শেখ হাসিনার যে মেন্টালি পার্থক্য এটা Gen-Z এর কোনভাবেই মনে থাকার কথা না।
এইযে ন্যারোটিভ মাইন্ডগেমের ইস্যু এখানে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তেমন কিছু উল্লেখ করার মতো কিছু করেছেন বলে দৃশ্যমান নাই।
এটা বিএনপির অন্যতম একটা রাজনৈতিক ও সামাজিক দুর্বলতা হিসাবেই আমার কাছে কাউন্ট হবে।
এই কারণে, যেখানে গত ১৫ বছরে আওয়ামিলীগ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। বর্তমান প্রজন্ম যাদের ফলো করেন, তাদের দিয়ে শেখ হাসিনার স্তুতি গাওয়াইছে।
ফলাফল তো এটার হাতেনাতেই দেখা যাচ্ছে।
আপনি খেয়াল করে দেখবেন, শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগের একেবারে তৃনমুল পর্যায়ের কর্মী পর্যন্ত কথায় কথায় পাকিস্তান যেতে বলেছে।
অথচ এই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর শহীদ জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন ও স্বাধীনতার যুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন।
এরপর তারা (আওয়ামীলীগ) কি করলো? এই জিয়াউর রহমানকেই রাজাকার বলে যাচ্ছেতাই ভাবে গালি দিলো।
এই প্রজন্ম কিন্তু ওই গালিটাই মনে রেখেছে, যে মেজর জিয়া বোধহয় এমনই।
বাট ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তাঁর শাসনামলে কি কি হয়েছিলো বা করেছিলেন সেসব ও কিন্তু মুছে ফেলা হয়েছে।
আজকের যে ফরেন কারেন্সি বাংলাদেশে আসার দুইটা মূল অস্ত্র একটা রেডিমেড গার্মেন্টস পণ্য ও বৈদেশিক শ্রমবাজার এই দুইটার শুরুটা উনি কিভাবে করেছিলেন সেটা পর্যন্ত এই জেনারেশনের কাছে অজানা করেই রাখা হয়েছে।
এখানেও বিএনপি এর নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বিরাট ভুল কতে আসলেন।
এখন দেখার বিষয় এই দুইটা ভুল বিএনপির নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ কিভাবে হ্যান্ডেলিং করে!
No comments:
Post a Comment