নিয়নবাতির ঝাপসা আলো যখন মুখে লাগছে, তখন হিম হয়ে যাওয়া বাতাস আর থেমে যাওয়া সালোকসংশ্লেষণের ঘর্ষণজনিত বলের বিপরীতমুখীতার চিত্রটা অবলীলায় দেখা যাচ্ছে।
ঝাপসা হলেও আজকাল পাতাদের গল্প শুনতে পাওয়া যায়!
আজকের রাতে পাতারা সব একটু বেশিই থমথমে।
ঘন্টা দুয়েক আগে আততায়ীর হাতেই খুন হয় জোড়া শালিক, কদিন আগেই নাকি ঘর গড়েছিলো।
পাতারা সব চিনতে পারলেও পুলিশের সামনে নাকি কেউ মুখ খোলে নি।
পাতারা সবাইকে একেরপর এক ভারী ভারী অভিশাপ দিচ্ছে।
সৃষ্টিকর্তার কাছে আরতি জানাচ্ছে, তাদের ও মুখ দেওয়ার জন্য, তারা নাকি বলে দেবে।
ভোরের আলো উঠে যায়, থমকে যাওয়া সালোকসংশ্লেষণ শুরু করার জন্য।
সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে, পাতারা সালোকসংশ্লেষণ আর প্রচ্ছেদনের কর্মযজ্ঞে সব ভুলে গেছে,অথচ তারাও সৃষ্টিকর্তার কাছে একটা মুখ চেয়েছিলো।
জোড়া শালিকের বুক, পেট, মাথা ফুড়ে ময়নাতদন্ত চলে বছরের পর বছর!
রিপোর্টের আগেই হয় ডাক্তার স্ট্রোক করে নয়ত বদলী হয়ে যায়।
দেশের সকল বুদ্ধিজীবীরা হাঁটুগেড়ে মানববন্ধন করে!
করজোড়ে, বিপ্লব ভিক্ষা চায়!
তবুও রিপোর্টটা আর আসে না।
একজোড়ার পরে হাজার জোড়া এভাবেই চলে যায়।
মেটাফিজিক্সের চাপে ডানপিটেরাও হয়ে যায় নিস্তব্ধ।
পুলিশ আসে লাশ নিতে।
ময়নাতদন্ত চলছে, বলে দাগ দিয়ে রাখে দিনের পর দিন!
শোনা যায় দেশ সেরা শার্লকহোমসরা এখানে নাকি আজ আসবে।
গতকাল এক নিহত কুকুরের ময়নাতদন্ত করতে।
অথচ এইতো বছর দুয়েক আগে জোড়া শালিকের বুক যখন একেসাতচল্লিশের কয়েকঝাঁক গুলি চিরে চলে গিয়েছিলো, তখন কোন মন্ত্রীর ও পা পড়ে নি।
নিহত কুকুরের দাফন হবে, কান কথা ভেসে আসে জানাজার জন্যও নাকি ফাউন্ডেশনের লোককে টর্চারসেলে বন্দী করা হয়েছে!
অথচ কুকুরের জানাজা হয় না।
প্রজাতন্ত্রের লেজগুলো বেশ আদুরে হয়ে গেছে, ডাকলেই গা ঘেঁসে আদর নিতে চায়!
বেশ প্রভুভক্তিও আছে!
আড়ালের অট্টহাসির জন্য আজকাল আর হাহাকার কানে আসে না।
কারা যেন বলে বেড়াচ্ছে, আকাশ দিয়ে মার্সিডিজ বেঞ্চ চললে নাকি ক্ষুধা থাকবে না, জোড়া শালিকগুলো ঘরে ফিরে যাবে।
আজকাল আর এসবে কোন ইন্টারেস্ট ফিন্টারেস্ট আসে না।
নিজেকে চুদিরভাই গালি দিয়ে কিং কোবরা ইফেক্টে সাজানো বাগানে ঢুকে যায় আগন্তুক।
আকাশে বেশ কিছু তোতাপাখি উড়ে যেতে দেখা যায়, এরা নাকি কথা বলে।
অথচ এদের মুখ থেকে সালাম আদাব ছাড়া আর কিছু বের হয় না!
বের হয় না মাননীয় ছাড়া আর কিছু!
অথচ আগন্তুকের মুখটাই ভোঁতা করে দেওয়া হয়েছে।
ভোঁতা মুখ নিয়ে যখন মানুষের সামনে যায়, তখন তেড়ে আসে কিছু যুবক!
বলে 'বাইঞ্চোদ, চোদাইতে পারিস না আবার কইতে যাস ক্যান?'
আগন্তুক খোড়া পা নিয়ে ছুটে চলে জোড়া শালিকের কবরের দিকে।
আজ তাদের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী।
No comments:
Post a Comment